শিক্ষাপ্রযুক্তির উন্নয়নে ১৩ লাখ ডলারের বিনিয়োগ পেয়েছে বাংলাদেশি স্টার্টআপ ‘শিখো’।

সিলিকন ভ্যালিভিত্তিক এডটেক বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ লার্ন ক্যাপিটালের সিড ফান্ড লার্নস্টার্ট ও প্রাথমিক পর্যায়ের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম অ্যাংকরলেস বাংলাদেশ যৌথভাবে এ বিনিয়োগ করছে।

মঙ্গলবার ‘শিখো’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, বিনিয়োগ পাওয়ার মধ্য দিয়ে অর্থায়নের সিড রাউন্ড শেষ হয়েছে।

বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সহায়তার মাধ্যমে শিখো পণ্য ও সেবার মান উন্নয়নের পাশাপাশি উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন টিম সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে।

শিখোর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও শাহীর চৌধুরীকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের অর্ধেকই ২৫ বছরের নিচে হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষার্থী ও তরুণদের জন্য দেশে মানসম্পন্ন শিক্ষার অভাব রয়েছে।

“বিশ্বমানের আধুনিক শিক্ষার অভিজ্ঞতায় শিক্ষার্থীদের সুযোগ গ্রহণ নিশ্চিত করতে ডিজিটাল লার্নিং ইকোসিস্টেম গড়ে তুলছে শিখো। আমাদের এই নিরলস চেষ্টা আগামী প্রজন্মের ওপর দীর্ঘস্থায়ী ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমরা মনে করি।”

শিখোর মাধ্যমে একটি শিক্ষার্থী খুবই সহজে তার বিষয়ভিত্তিক শিক্ষাযাত্রা সম্পন্ন করতে পারে। অ্যাপের মধ্যেঅ্যানিমেটেড ভিডিওর মাধ্যমে বিষয়গুলোকে সহজভাবে ব্যাখা করা হয়েছে। সহজে বোধগম্য সমাধানসহ বিশালপ্রশ্নব্যাংকের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে অনুশীলনী।

আরও রয়েছে সংজ্ঞা, সূত্র, প্রমাণ এবং বিভিন্ন ‘হ্যাক’ সম্বলিত স্মার্ট নোটস’ এবং অফলাইন কোচিং সেন্টারেশিক্ষকতার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষকদের সাথে লাইভ ক্লাসে অংশগ্রহণের সুযোগ।

রিয়েল টাইম ডেটা অ্যানালিটিক্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পারফর্মেন্স ও অগ্রগতি ট্র্যাক করে অ্যাপটি প্রত্যেকশিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগতভিত্তিতে বিষয়ভিত্তিক দূর্বলতার ব্যাপারে পরামর্শ দেয়।

শিখোর আরেক সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিওও জিশান জাকারিয়া বলেন, “শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত একটিকার্যকর কৌশল হলো ‘মাস্টারি লার্নিং’।

“আমরাও উক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করে টপিক ও সাব-টপিকে ভাগ করে কোর্সগুলো সাজিয়েছি। আমরা জানি, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের শিক্ষার মত একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন।”

এই নতুন বিনিয়োগের সাহায্যে শিখো নতুন ওয়েব প্ল্যাটফর্ম এবং অ্যাপ তৈরির কাজ করছে, যাতে ব্যবহারকারীরামোবাইল ফোনের পাশাপাশি ডেস্কটপ ল্যাপটপের মতো বড় স্ক্রিনেও স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা পাবেন।

শিখোর প্রতিষ্ঠাতাদের একটি টিচার্স অ্যাকাডেমি’ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে যার মাধ্যমে অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগএবং তাদের আরও প্রশিক্ষিত করে তোলা হবে যাতে করে তারা শিখো প্ল্যাটফর্মে শিক্ষার্থীদের দিক নির্দেশনা ওফিডব্যাক প্রদান করতে পারেন।

এছাড়াও ভবিষ্যতে দেশের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক, প্রফেশনাল লার্নিংসহ সম্পূর্ণশিক্ষাযাত্রায় অবদান রাখতে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

শিখো’র প্রাথমিক পর্যায়ের বিনিয়োগদাতা সিলিকন ভ্যালি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘লার্নস্টার্টের ম্যানেজিং পার্টনার ডনবার্টন বলেন, “আমরা সারা বিশ্বে প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সম্ভাবনা প্রত্যক্ষ করেছি এবংবাংলাদেশের জন্য শিখো’কে একইভাবে কাজ করতে দেখে আমরা আনন্দিত। শিখো’র অত্যন্ত সুদক্ষ টিমকেসার্বিক সহায়তা প্রদানে আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখব।”

অ্যাঙ্করলেস বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী রাহাত আহমেদ বলেন, “আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার তুলনায় বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রযুক্তির উন্নয়নের অনেক সুযোগ রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, শিখো টিম এই খাতে নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে উন্নতি সাধনে সক্ষম হবে।”

এর আগে প্রি-সিড ফান্ড হিসেবে লার্নস্টার্ট ও অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টরদের কাছ থেকে ২ লাখ ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার পেয়েছে শিখো।

Source: bdnews24